২ জুন, ২০১৯

ফ্যামিলিসহ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ সাথে ছেড়া দ্বীপ

শাহাজাহান ভাই’র প্রস্তাব: সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমনে যাব।

সিদ্ধান্ত হল আমরা ০৮ হতে ১০ ফেব্রুয়ারী সেন্ট মার্টিন ও ছেড়া দ্বীপ ভ্রমণ করব, ইনশাল্লাহ।

All Tourists We Had the Tour to St. Martin Islands
০৮ ফেব্রুয়ারী রাত ১২ টায় আমরা চট্টগ্রাম দামপাড়া হতে সৌদিয়া গাড়িতে যাত্রা করি টেকনাফের উদ্দেশ্যে। আমারা মোট ৫ পরিবার, ১৭ সদস্য। 

ভোর হওয়ার কিছুটা আগেই আমরা পৌছে যাই টেকনাফে। শহরের ”প উ ষী” আবাসিক হোটেলে কয়েক ঘন্টার যাত্রা বিরতি করি। সহ সবাই ফ্রেশ হই। সবাই একসাথে ”প উ ষী” এর নিচ তলার রেস্টুরেন্টে নাস্তা করি।

Teknaf Poush Hotel, We Took Rest
টেকনাফ প উ ষী হোটেলে সকালের নাস্তা

সকাল ৮:৩০ টায় যাই টেকনাফ জাহাজ ঘাটে।

We are waiting for ship at Teknaf

সময়মত উঠে পড়ি “কেয়ারী কুরুজ এন্ড ডাইন” (Keari Cruise and Dine) এ।

“কেয়ারী কুরুজ এন্ড ডাইন” (Keari Cruise and Dine)


উঠে পড়লাম জাহাজে। এ সি কম্পার্টমেন্ট বেশ সুসজ্জিত ও পরিপাটি। 




সারাক্ষন শুধু ঘুরাঘুরি করছি আর উপভোগ করছি নদী ও সাগরের নির্মল প্রকৃতি।

On the Ship's Mast

On the Ship's Mast


নাফ নদীর বুক চিরে আমরা ছুটে চলছি বঙ্গোপসাগর তথা সেন্ট মার্টিন এর দিকে। 

হাসি আনন্দ আর সেলফি/ভিডিও উপভোগ করতে করতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সেন্ট মার্টিন এর দিকে।

সমুদ্রের বুক চিরে সেন্টমার্টিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।  বাচ্চারা ছুটোছুটি করছিল জাহাজের বিভিন্ন জায়গায়। 



আর আমাদের জাহাজ কে অনুসরণ করা অসংখ্য সুন্দর সুন্দর সিগাল (গাঙচিল)।

Amazing Flying Sea Gull in The Bay-of-Bengal

ওরা আমাদেরকে বিশ্বাস করে অনুসরণ করছিল এবং আমরা যে খাবার দিচ্ছিলাম সেগুলি তারা লুফে নিচ্ছিল। 

নীল জলরাশির বঙ্গোপসাগর, নাফ নদী এবং এলাকা উপভোগ করতে করতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জাহাজ ঘাটে পৌঁছে গেছি।

Getting down from Ship, Keary Cruise and Dine

জাহাজ থেকে নামলাম এবং জাহাজ ঘাট থেকে আমাদের আগেই বুকিং দিয়ে রাখা লাইট হাউজ রিসোর্ট  মাত্র ৫-৭ মিনিট এর মধ্যে পৌঁছে গেলাম।

আমরা প্রবেশ করলাম যার যার জন্য নির্ধারিত রুমে।
লাইট হাউস রিসোর্ট এর মধ্যে ১
লাইট হাউস রিসোর্ট এর মধ্যে ২
লাইট হাউস রিসোর্ট এর মধ্যে ৩
লাইট হাউস রিসোর্ট এর মধ্যে ৪

আমার রুমের নাম ছিল দোলনচাঁপা, রোমান্টিক একটা নাম।

লাঞ্চেল অর্ডার দিয়ে আমরা বের হলাম সেন্টমার্টিন ওয়েষ্ট বিচের দিকে।

আমরা দ্রুত বেরিয়ে পড়লাম রিসোর্ট থেকে এবং পৌছে গেলাম সেন্টমার্টিনের ওয়েস্ট 
পয়েন্টে।

শামীম ও তার পরিবার ওয়েষ্ট বিচ: সেন্টমার্টিন

শাহাজাহান ও তার পরিবার ওয়েষ্ট বিচ: সেন্টমার্টিন
মনির ও তার পরিবার ওয়েষ্ট বিচ: সেন্টমার্টিন
রেজা ও তার পরিবার ওয়েষ্ট বিচ: সেন্টমার্টিন
St. Martin Ship Ghat to Resort

সেন্টমার্টিনের ওয়েস্ট বিচে যে যার মত দৌড়াদৌড়ি, সাঁতার কাটা, লাফালাফি, সেলফি ভিডিও ইত্যাদিতে কেটে গেল। 

Shamim at Samudra Bilash
যাহোক আমাদের বিচের ঘোরাঘুরি ছবি তোলা সেলফি পর্ব শেষ হলো। ঘোরাঘুরি করলাম হুমায়ূন আহমেদ খ্যাত সমুদ্র বিলাসে। 


রিসোর্টে এসে ফ্রেশ হই এবং ইতিমধ্যে আমাদের জন্য অর্ডারকৃত লাঞ্চ  প্রস্তুত। সেরে ফেলি লাঞ্চ। 

এরপর বেরিয়ে পড়ি আমাদের রিসোর্টের খুবই সন্নিকটে সি বিচ দেখতে।

সন্ধায় চলে যাই জাহাজ ঘাট সংলগ্ন বাজারে। উপভোগ করব মচমচে ফ্লাইং ফিস। 

Sea Fish/Sea Foods at St. Martin

রাতে ছিল কোরাল বারবিকিউ।

এরপর প্রায় রাত ১২ টায় বারবিকিউ রেডি এবং ডাক পড়ল ডিনারের জন্য।

আমাদের রিসোর্টে অন্য একটি বড় টিম এসেছে তাদের আয়োজনে গান ফানুষ ওড়ানো এনজয় করলাম। 

দ্বিতীয় দিন:

ভোরবেলা উঠে আমরা কয়েকজন বেরিয়ে পড়ি পায়ে হেঁটে পুরা সেন্টমারটিন ঘুরতে।

শুরু হলো দ্বিতীয় দিনের আসল আকর্ষন। গন্তব্য ছেড়া দ্বীপ। 

আমরা সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে সবাই চলে গেলাম জাহাজ ঘাটে একটি শাম্পান ভাড়া করে যাত্রা শুরু করি ছেড়া দ্বীপের উদ্দেশ্যে।






যাওয়ার পথে আমরা দেখেছি পরিষ্কার স্বচ্ছ পানির সাগর এবং সেখানে জীবিত ও মৃত অনেক প্রবাল এবং শৈবাল।
সামুদ্রিক প্রবাল ১
Marine coral


মাইকিং করা হচ্ছিল যে এখানে যেন কোন ধরনের ময়লা আবর্জনা ফেলা না হয়।

সেন্টমার্টিন এবং ছেঁড়া দ্বীপের প্রাকৃতিক বৈচিত্রকে অক্ষুন্ন রাখার জন্য আমাদের সকলের ঐকান্তিক চেষ্ট করা উচিত।

আমরা সবাই ছেড়া দ্বীপের ডাবের স্বাদ নিতে ভুল করিনি।

Source: outbackadventuresdr


ফাইনালি, আমরা ছেঁড়া দ্বীপ এর প্রকৃতি পরিবেশ উপভোগ শেষে আমরা আমাদের সাম্পানে ফিরে আসলাম সেন্টমার্টিনের রিসোর্টে।

লাঞ্চ সেরে সবাই যার যার মালামাল গুছিয়ে যথারীতি আগে থেকেই বুকিং দেওয়া জাহাজে উঠে পড়লাম। 

সমাপ্ত হল আমাদের দুই দিন এক রাতের মজার সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ।

আরো জানতে আমাদের : 

Facebook.com/Travell2Life

Pinterest.com/Travel2Life/

Instagram.com/travell2life

Twitter.com/Travell2Life


Viewbug.com/member/Travel2Life

Blog: VromonBangla.com


৭ এপ্রি, ২০১৯

মুসলমানদের দুই কিবলার ইতিহাস : দুই কিবলা মসজিদ


আজ আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এক স্থাপনা এবং প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সঃ)এর স্মৃতি বিজড়িত মসজিদ আল কিবলাতাইন বা দুই কিবলা মসজিদ নিয়ে।

দুই কিবলা মসজিদের বিস্তারিত ভিডিও দেখুন: 



এই Presentation এ দেখবেন ইসলামের ইতিহাসের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই মসজিদের নান্দনিক নির্মানশৈলী, বৈচিত্রময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক পটভুমি এবং মসলমানদের নিকট এই মসজিদের গুরুত্ব ও তাৎপরয।

দুিই কিবলা মসজিদ

গত কয়েকদিন মক্কায় অবস্থান, পবিত্র উমরাহ পালন ও জিয়ারাহ শেষে আমরা এসেছি পবিত্র শহর সোনার মদিনায়। এবং প্রধান আকর্ষণ মসজিদে নববীর পরে আজকের গন্তব্য মসজিদ আল কিবলাতাইন বা দুই কিবলা মসজিদ

অবস্থান : মদিনার মসজিদ এ নববী হতে মাত্র ৫/৬ কিলোমিটার দুরে এই মসজিদ অবস্থিত।
দুই কিবলা মসজিদে পুরুষ ও মহিলদের প্রবেশের জন্য রয়েছে আলাদা গেট।

Dui Qibla Masjid

মসজিদে রয়েছে ২টি সু্উচ্চ মিনার এবং ১টি গম্বুজ। মসজিদটিতে একসাথে ২০০০ হাজার মুসল্লি নামায আদায় করতে পারেন।

অপূর্ব নির্মানশৈলি, নান্দনিক সৌন্দর্য এবং ইসলামী ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক  এই নামাজের ঘর, মসজিদ আল কিবলাতাইন এর স্থপতি আবদেল-ওয়াহেদ আল ওয়াকিল।

মুসলমানদের নামাযের দিক নির্দেশকই হল কিবলা অর্থাৎ যার দিকে মুখ করে নামায আদায় করা হয়।

রাসুল (সঃ)মক্কায় অবস্থান কালে মসজিদ আল হারম এবং আল-আকসা মসজিদ উভয়কে সমান্তরাল বরাবর সামনে রেখে নামাজ আদায় করতেন কিন্তু মক্কা হতে মদিনায় হিজরতে করার ফলে শুধুমাত্র আল-আকসা মসজিদ কে সামনে করে নামাজ আদায় করতে হত। কিন্তু তাঁর মনের আশা ছিল যে তিনি যদি হযরত ইবরাহিম (আঃ) এর স্মৃতি বিজড়িত মাসজিদ আল হারম এর দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে পারতেন। তবে  তিনি এ বিষয়ে আল্লাহর কাছে কোন আরজি পেশ করেন নি।

কিন্তু অন্তর‌যামী মহান আল্লাহ তার অন্তরের আশা পূরন করার জন্য সুরা বাকারার ১৪৪ নাম্বার আয়াতের মাধ্যমে আদেশ করেন:



প্রিয় পাঠক,

আমি এখন দুই কিবলা মসজিদের ভিতরে দেখেছে এখান থেকে ঠিক উত্তর দিকে ছিল মসজিদ আল আকসা যাকে কিবলা করে মুসলমানরা নামায আদায় করত।
এই দুই কিবলা মসজিদে একদিন নামাযরত অবস্থায় (দুই রাকাত নামায শেষ হওয়ার পর) ওহি আসে কিবলা পরিবর্তন করার জন্য। এবং তৎক্ষনাত উত্তর দিক হতে  দক্ষিনে অর্থাৎ মসজিদ আল হারমের দিকে ঘুরে বাকি নামায শেষ করেন।

dui qibla mosque
Source: Wikipedia


মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) মক্কা ছেড়ে মদিনায় গিয়ে হিজরত করেন ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ সেপ্টেম্বর। এ সময়ও কিবলা ছিল আল-আকসা মসজিদ বা বাইতুল মুকাদ্দাস অভিমুখে যা বর্তমান ইসরাইলের জেরুজালেম শহরে অবস্থিত। হিজরতের দ্বিতীয় বছর ৬২৩ খ্রিস্টাব্দে রজব মাসের মাঝামাঝি সময়ে কিবলা পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে। নামাজের ওয়াক্ত ছিল যোহর মতান্তরে আসর

তখন রাসুল (সঃ) নামায পড়ছিলেন মদিনার মসজিদ এ নববী হতে মাত্র ৫/৬ কি/মি দুরে অবস্থিত একটি মসজিদে। এবং এই কারনে এই মসজিদের নাম হয় মসজিদ আল কিবলাতাইন বা “দুই কিবলা মসজিদ” যা ইসলামের ইতহাস, রাসুল সঃ এর স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আজও।

Qibla for the muslim


বড়ই পরিতাপের বিষয় মুসলমানদের প্রথম কিবলা “মসজিদ আল আকসা” বর্তমানে ইহুদিদের দখলে এবং মুসলমানদের সেখানে গিয়ে এবাদত করতে দেওয়া হয় না।  

আরো জানতে ভিজিট করুন: 

Youtube: Travel2Life

Facebook Page

Source of Some Info: 

https://bn.wikipedia.org//wiki/মসজিদ_আল_কিবলাতাইন